কলুর বলদ -৩

বাংলা নাটক কলুর বলদ এবং কলুর বলদ -২ দেখার  পর মনে হচ্ছিল এই ব্যাপারটা খুবি স্বাভাবিক আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে। কিন্তু অনেকের আবার ভাবসাব দেখে মনে হল এইটা কোন অলৌকিক ঘটনা যদিও খুবি হৃদয়বিদারক  এই ঘটনাটি এই প্রথম টেলিভিশনে দেখালাম এইটা যেমন দেখলাম ঠিক এইটাও সত্য যে এই ঘটনাগুলো নিয়মিত বাস্তব জীবনে দেখছি
যাই হোক যারা এখনো কলুর বলদ এবং কলুর বলদ -২ নাটকটি দেখেননি তাদের জন্য একটু আলোচনা করি নাটক দুটি একটি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সুখ,দুখ,অভাব,চাহিদা এবং সেই পরিবারের একটি ছেলের বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে সেই পরিবারের প্রতিটি সদস্যদের ভোগ বিলাস ইত্যাদি এই দুই নাটকের মধ্যদিয়ে প্রকাশ পায় এবং সেই ছেলেটি যখন বিদেশ থেকে দেশে ফিরে আসে ঠিক তখন থেকেই তার আবার বিদেশ চলে যাওয়ার সময় জানতে চাওয়া থেকে শুরু করে তাকে বুঝানো হয় সে কেন আবার চলে যাচ্ছে না এবং কলুর বলদ-২ এ দেখানো হয় তার কষ্ট উপার্জিত টাকা দিয়ে তৈরি বাড়ি, সংসারের কিছুই তাকে দেয়া হয় না তাকে দেয়া হয় গোয়াল ঘর থাকার জন্য তার বিবি তখন প্রেগন্যান্ট এমন অবস্থায় তাকে আবার বিদেশ চলে যেতে হয়।
এইবার আসি আলোচনায় পৃথিবীতে দুই ধরণের মানুষ আছে এক দানশীল আরেক-দান গ্রহণকারী।পৃথিবীর অন্যান্য দেশে এই দানশীল মানুষের সংখ্যা বেশি কিন্তু আমাদের দেশে এর বিপরীত।The measure of life, after all is not it's duration but it's donation. 
এখানে একটা কথা বলে রাখা ভাল যে যারা দান গ্রহণকারী তারা সব সময় দান নিতেই ভালবাসে।আর যারা দাতা তারা নিজের শেষ সম্বলটুকু দান করতেও একবারও ভাবেন না। আমি পৃথিবীতে বহু লোক দেখেছি যারা এই নাটকের নায়কের মতো বাস্তব জীবনের নায়ক। তারা হয়তোবা আবার পৃথিবী থেকে চলেও গেছে। তারা আমাদেরকে শিখিয়ে গেছেন যে, উদারতা কি?,মনবতা কি?,জিবন কি?, শুধুই কি আরেকজনের উপার্জনের উপর নির্ভর করা।
অনেকেই বিশ্বাস করেন যে, আরেকজনের টা নিয়ে তো ভালই আছি। কষ্ট করে উপার্জন করার কি দরকার। কিন্তু তারা বুঝে না দান/দেয়ার মাঝে যে কি আনন্দ।
এই আনন্দ সবাই জীবনে পায় না। শুধু তারাই পায় যারা অনেক বড় মনের অধিকারী।

কলুর বলদ -৩ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অনেক কথাই বলে ফেলেছি।এখন বলি কলুর বলদ-৩ তে কি ঘটবে। এই নাটকের নায়ক আবার বিদেশ থেকে ফিরবে দুহাত ভর্তি নিয়ে।সে তার দান করা জিনিসগুলো আবার সুন্দর করে গড়তে  সক্ষম হবে।আবার তার সংসার সুন্দর করে সাজাতে পারবে তার মা আর গৃহিণী নিয়ে। কিন্তু তিনি এবার বাসা থেকে ফিরে দেখবে যে ,তিনি যাদেরকে তার আগের করা সম্পত্তি গুলো যাদেরকে দিয়েছিলেন তারা সেই সব সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়ে আবার অসহায় জীবন জাপন করতেছে। তারা যেই ভাইকে বোকা ভেবে তারই টাকায় করা সম্পত্তি থেকে আলাদা করেছিল তারা সুন্দর জীবন যাপন করবে বলে। কিন্তু অন্নের পথচেয়ে থাকলে তো জীবন চলে না তখন তারা বুঝতে পারবে।
সেই নাটকের নায়ক ও তাদেরকে ক্ষমা করে দিবে। হৃদয় থেকে সব ক্ষোভ দুঃখ কষ্ট ঝেরে ফেলে দিবেন শুধু মাত্র তার ক্ষমাশীলতার এবং উদারতার গুনে।

এই নাটক এবং এই লেখা থেকে আমাদের শিখতে হবে যে, কারো কাছে থেকে নেয়া নয় দেয়া শিখতে হবে তাহলেই পৃথিবীটা সুন্দর হবে। নিজে নিজেদের মধ্যে লোভ লালসা হিংসা দূর হবে। কাজ না করলে তথা নিজে স্বাবলম্বী না হলে অভাব অনটন দেখা দিবে আর অডেল সম্পত্তিও শেষ হয়ে যাবে। আর এই অভাব অনটনের জন্য সমাজে সকল প্রকার ক্রাইম হয়ে থাকে।
ছেলের হাতে বাবা খুন,ছেলের হাতে মা খুন,ভাইয়ের হাতে ভাই খুন ।



এইসব নিউজ পড়তে হৃদয় কেঁপে উঠে। আমরা নিজেদেরকে নিয়ে নিজেদের কথিত সুখের জন্য, অল্প কিছু টাকার জন্য এইসব ঘটনার জন্ম দিয়ে থাকি। ভুলে যাই কে আপন কে পর। আমদের বিবেক কে কখনো প্রশ্ন করি না যারা আমাদেরকে পৃথিবীতে এনেছেন,যাদের জন্য আজকে আমি এত বড়। আমি জন্ম নেয়ার পর যারা আমাদের প্রথম গোসল করিয়েছেন,আমার কানে ফু দিয়েছেন আজ তাদেরকেই আমরা খুন করি কিন্তু ভুলে যাই আমি মারা যাওয়ার পর আমার গোসল কে করাবে,আমার নিথর দেহখানি কে দেখবে,কে আমার কবরের পাশে একবার ছেড়ে আরেকবার যাবে। কে আপনার কাধে হাত রেখে বলবে যে ভাই তুই চিন্তা করিস না আমি তো আছি। কে বলবে বাবা তোর মুখটা না দেখলে ভাল লাগে না। কোন বোন মায়াভরা মুখে বলবে ভাই তুই আমাকে দেখতে আসিস না কেন?




আহারে জীবন!!! আহারে জীবন!!! আহারে জীবন!!! আহারে জীবন!!!




জীবন থেকে শিখতে হবে,মানতে হবে,পরিনতি দেখে ভয় পেতে হবে।